প্রোজেক্ট না থিসিস
প্রোজেক্ট না থিসিস এর মতোই আরেকটা প্রশ্ন এই সময়টায় নিয়মিত পাই সেটা হল – কোন লাইনে যাবো?
প্রোজেক্ট নাকি থিসিস? অনেকে নক দিয়ে জিজ্ঞেস করেছে এই ব্যাপারে। সবাইকে ঘুরেফিরে একই কথা বলতে হচ্ছে তাই কমন প্রশ্নগুলোর উত্তর এখানে দেয়ার চেষ্টা করলাম। এর বাইরে কোন প্রশ্ন থাকলে এই পোস্টে কমেন্ট করলে উত্তর দেয়ার চেষ্টা করব-
——-
১. প্রোজেক্ট করবো নাকি থিসিস?
——-
১. প্রোজেক্ট করবো নাকি থিসিস?
– এই প্রশ্নের উত্তর আসলে প্রত্যেকের নিজের দিতে হবে। নিজের প্রায়োরিটিগুলো চিন্তা করে তারপরে সিদ্ধান্ত নাও।
থিসিসঃ
খুব জেনেরিকভাবে বললে, MS/Ph.D./ দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষা এরকম টার্গেট থাকলে থিসিসটা সাহায্য করবে কিছুটা। তারমানে এটা না যে চাকরি করতে গেলে থিসিস দেখে বাদ দিয়ে দিবে। থিসিস করলেও সেটা ইমপ্লিমেন্ট করতে হবে, প্রোজেক্ট করলে তো অবশ্যই। থিসিস এ বরং কাজ বেশি, আইডিয়া তৈরি করতে হবে, ফরমালি লিখতে হবে, ব্যাকগ্রাউন্ড স্টাডি করতে হবে প্রচুর, এক্সিস্টিং কাজগুলার লিমিটেশন খুঁজে বের করতে হবে, নিজের আইডিয়া তৈরি করে এলগোরিদম/সিস্টেম ডিজাইন করে সেটাকে ইমপ্লেমেন্ট করে ভালো রেজাল্ট আনতে হবে।
থিসিস এর কাজটা যদি ভালো হয় তাহলে সেটাকে রিসার্চ পেপার হিসেবে কোনো কনফারেন্স বা জার্নালে পাবলিশ করা গেলে সেটা অবশ্যই নিজের প্রোফাইলে/সিভিতে যোগ করা যাবে। থিসিস করলেই সেটা পাবলিশ করা যাবে এরকম কোনো গ্যারান্টি নেই, মোটামুটি কাজ করে হয়তো ডিফেন্স দিয়ে দেয়া যাবে কিন্তু পাবলিকেশন এর জন্যে সেটাকে রিসার্চ পেপার ফরম্যাটে লিখতে হবে, যথেষ্ট ভালো কাজ হয়েছে সেটা প্রমাণ করতে হবে। দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষার জন্যে রিসার্চ পেপার থাকাটা বাধ্যতামূলক না, তবে থাকলে তো অবশ্যই ভালোই।
প্রোজেক্টঃ
অন্যদিকে যাদের পাস করার সাথে সাথেই চাকরীতে ঢুকতে আগ্রহী তাদের ক্ষেত্রে হয়তো প্রোজেক্টটা বেশি হেল্পফুল হতে পারে। প্রোজেক্টে মোটামুটি বড় স্কেলের কাজ করলে অনেক কিছু শেখা হবে + সিভিতে সেটা লেখা যাবে, নিজের কাজ হিসেবে দেখানো যাবে। ফ্রেশারসদের নিয়োগ দেয়ার ক্ষেত্রে অনেক সময়েই লাস্ট একাডেমিক প্রোজেক্ট/থিসিস নিয়েই বেশি প্রশ্ন করা হয়, যেহেতু এটাই সবচেয়ে বেশি সময় নিয়ে, বড় আকারে করা হয়। আবার প্রোজেক্ট করা মানে উচ্চশিক্ষা নেয়া যাবে না এরকম কোনো ব্যাপার না। BUBT-র অনেক ছাত্রছাত্রী আছে যারা প্রোজেক্ট করেছে (আগে থিসিস সেভাবে করা হত না, প্রায় সবাই প্রোজেক্ট করতো) এবং বর্তমানে দেশে বা দেশের বাইরে মাস্টার্স করছে।
মূল কথা হল প্রোজেক্ট বা থিসিস যেটাই করো, লাস্ট সেমিস্টার এর জন্যে ফেলে না রেখে এখন থেকেই কাজ শুরু করে দাও যাতে ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হয়ে গেলেই ডিফেন্স দিয়ে দিতে পারো। নয়তো প্রোজেক্ট/থিসিসএর জন্যে চূড়ান্ত রেজাল্ট আটকে থাকবে, এটা গলার কাঁটায় পরিণত হবে। এবং যেটাই করো সেটায় নিজে এক্টিভলি কাজ করার চেষ্টা করো কারণ এটা তোমার সিভিতে থাকবে, ভাইভায় এটা নিয়ে প্রশ্ন করার অনেক সম্ভাবনা আছে।
——
——
২. প্রোজেক্ট করতে চাইলে কোন ধরণের কাজ করা উচিত?
– SDP কোর্সগুলাতে যে ধরণের প্রোজেক্ট করানো হয় সেগুলার মতই, আরও বড় স্কেলে, বড় পরিসরে করা যায়। ওয়েব/এন্ড্রয়েড এপ্লিকেশন বা অন্য অনেক কিছুই হতে পারে। যে ধরণের জবে যাওয়ার ইচ্ছা আছে সেগুলা রিলেটেড কোনও প্রোজেক্ট ও করা জেতে পারে। সিনিয়র স্টুডেন্ট যারা জব করছে তারা হয়তো ভালো পরামর্শ দিতে পারবে এই ব্যাপারে।
প্রোজেক্টে থিসিস এর মতো পেপার পড়া না থাকলেও অনেক ঘাঁটাঘাঁটি করতে হবে, নতুন অনেক কিছু শিখতে হবে, ফাইনালি বেশ বড় একটা প্রোজেক্ট রিপোর্ট লিখতে হবে।
——
——
৩. থিসিস করলে কোন টপিকে করা উচিত? কি কি ধাপ আছে রিসার্চের? রিসার্চ পেপার কোথায় খুঁজে পাবো?
– অনেক টপিক আছে করার মতো, এই মুহূর্তে প্রচুর কাজ হচ্ছে কিছু টপিকে – Artificial Intelligence (More specific: Machine Learning, more specific: Deep Learning), Big Data Analytics (High Performance Computing), Human-Computer Interaction (HCI) ইত্যাদি। আর ক্লাসিক্যাল রিসার্চ ফিল্ড Computer Vision, Image Processing, Networking এগুলো তো আছেই। সুপারভাইজর যে স্যার থাকবেন তার সাথে কথা বলে ঠিক করে নিতে হবে কোন ফিল্ডে কোন টপিকে কাজ করা হবে।
থিসিস এর জন্যে টপিক/ফিল্ড সিলেক্ট করার পর অনেক রিসার্চ পেপার পড়তে হবে আইডিয়া পাওয়ার জন্যে যে বর্তমানে কি কি টেকনিক চালু আছে, সেগুলার দুর্বলতা বা সীমাবদ্ধতা খুঁজে বের করে বেটার সিস্টেম তৈরি করতে হবে। তার জন্যে এলগোরিদম লেখা, সিস্টেম ডিজাইন, যা যা দরকার করতে হবে। ইমপ্লিমেন্ট করা হয়ে গেলে এক্সিস্টিং সিস্টেমগুলার সাথে পারফর্মেন্স কম্পেয়ার করে দেখতে হবে নতুন সিস্টেমটা বেটার কাজ করে কিনা। বেটার না হলে আরও চেঞ্জ/আপডেট করে দেখতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত যথেষ্ট ভালো রেজাল্ট না আসছে ততক্ষণ চেষ্টা করে যেতে হবে।
রিসার্চের ধাপগুলো কিছুটা এরকম –
http://www.aasurg.org/…/interested-research-dont-know-11-s…/
http://www.aasurg.org/…/interested-research-dont-know-11-s…/
রিসার্চ পেপার খোঁজার জন্যে –
https://www.sciencebuddies.org/…/finding-and-accessing-scie…
https://www.sciencebuddies.org/…/finding-and-accessing-scie…
—–
৪. প্রোজেক্টের চাইতে থিসিসে কি কোড কম করা লাগবে?
– ডিপেন্ড করে কি ধরণের কাজ তার উপরে। প্রোজেক্টের চাইতে থিসিস এ কোড বেশিও করতে হতে পারে। কিছু রিসার্চে নতুন সিমুলেটর বা ম্যাটল্যাবের কাজ শিখতে হতে পারে। অনেক রিসার্চ পেপার পড়তে হবে, সেগুলা ইমপ্লিমেন্ট ও করতে হতে পারে কম্প্যেয়ার করার জন্যে।
—–
৫. থিসিস করার পর যদি রিসার্চ পেপার পাবলিশ করা হয় তখন সেটায় গ্রুপ মেম্বারদের নাম কিভাবে দেয়া হবে? প্রথমে যার নাম থাকবে পেপারটা কি শুধু তার-ই হবে?
– একটা রিসার্চ পেপারে অথর (লেখক) হিসাবে অনেকজন এর নাম থাকতে পারে, ১ জন থেকে শুরু করে ৬-৭ জন এর নাম ও থাকতে পারে। সাধারণভাবে ধরে নেয়া হয় যে পেপারের কাজে যার ভূমিকা বেশি তার নাম শুরুতে থাকবে, ফার্স্ট অথর হিসাবে। এরপর অবদান অনুযায়ী বাকিদেরটা থাকবে, সুপারভাইজর স্যার এর নাম সাধারণত সবার শেষে থাকে। সাধারণভাবে এটা নিজেদের মাঝে কথা বলে ঠিক করে নিতে হয়, পেপারের মূল আইডিয়া, এলগোরিদম ডিজাইন এগুলাতে নরমালি ফার্স্ট অথর এর ভূমিকা বেশি থাকে, অন্যদের ভূমিকা থাকে এক্সপেরিমেন্ট, লেখা, প্রেজেন্টেশন এসবে। সমান ভূমিকাও থাকতে পারে, কিছু পেপারে এরকম দেখসি লিখে দেয়া আছে যে প্রথম দুইজন অথর এর সমান ভূমিকা ছিল। এক্ষেত্রে সুপারভাইজর স্যার ও নির্ধারণ করে দিতে পারবেন কার নাম কোথায় থাকবে। থিসিস কমপ্লিট মানেই পেপার হয়ে গেলো ব্যাপারটা এরকম না। থিসিসের জন্যে ৭০-১০০ পাতার রিপোর্ট লিখে বাঁধাই করে বই আকারে জমা দিতে হয়, রিসার্চ পেপার হয় ৮-১৫ পাতার, বা আরেকটু বেশি, নির্দিষ্ট ফরম্যাটে লিখতে হয়।
ফার্স্ট অথর একজন হলেও পেপারটা গ্রুপের সবারই। পেপারে অথর হিসেবে যত নাম্বারেই নাম থাকুক, সিভিতে সেটা উল্লেখ করা যাবে। ফার্স্ট অথর হলে অবশ্যই সেটা ভালো, না হয়ে সেকেন্ড বা থার্ড হলেও সিভিতে পেপার এর নাম, কোথায় পাবলিশ হয়েছে এগুলা লেখা যাবে। বিএসসি লেভেলে আসলে স্টুডেন্টদের পেপার থাকবে এটা সেভাবে আশা করা হয়না, নিজের প্রোফাইলটা একটু বেটার করার জন্যে পেপার থাকাটা হেল্পফুল।
—–
—–
৬. থিসিস/রিসার্চ করে যদি ভালো ফলাফল না আসে তখন কি হবে? তখন কি থিসিস জমা দেয়া যাবে? পেপার পাবলিশ করা কি সম্ভব হবে?
– রিসার্চ করলে ফলাফল তো অবশ্যই আসবে কিছু না কিছু, হয়তো এক্সপেক্টেড রেজাল্ট বা এক্সিস্টিং সিস্টেমের চাইতে বেটার রেজাল্ট না আসতে পারে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই কিছু পরিবর্তন এনে নানারকম এক্সপেরিমেন্ট করে চেষ্টা করতে হবে। একাডেমিক থিসিস এর ক্ষেত্রে প্রত্যাশিত ফলাফল না পেলেও কি কি ওয়েতে চেষ্টা করা হল, সেগুলার ফলাফল কি আসলো, কি কি সম্ভাব্য কারণে প্রত্যাশিত ফলাফল আসেনি, এগুলোকে গুছিয়ে লিখে হয়তো থিসিস জমা দেয়া সম্ভব। এ ধরণের কেসে রিসার্চ পেপার পাবলিশ করা একটু কঠিন হয়ে যায় কারণ পেপারে নরমালি আশা করা হয় যে কিছু নতুন কাজ বা ইমপ্রুভমেন্ট দেখানো হবে।
এটা মাথায় রাখতে হবে যে কাজটা আগে তোমাদের একাডেমিক থিসিস, বেশ বড় একটা ক্রেডিটের জন্যে। এটার মাধ্যমে রিসার্চ প্রক্রিয়াটার সাথে পরিচিত হওয়া যাবে, কিন্তু দারুণ রেজাল্ট আসবে বা রিসার্চ পেপার পাবলিশ করা যাবে এটা আগে থেকেই প্রত্যাশা না করাই ভালো। আর সফল রিসার্চের জন্যে অনেকদিন ধরে কাজ করতে হয়, এক সেমিস্টার বা দুই সেমিস্টার সেজন্যে পর্যাপ্ত সময় নাও হতে পারে।
মজার ব্যাপার হল নেগেটিভ রেজাল্ট পাবলিশ করারও কিছু ব্যাবস্থা আছে (https://academia.stackexchange.com/…/why-dont-research…/741…), তবে অবশ্যই চেষ্টা করতে হবে ভালো জায়গায় ভালো কাজ করে পাবলিশ করার।
আরও বিস্তারিত –
https://academia.stackexchange.com/…/what-if-my-research-do…
আরও বিস্তারিত –
https://academia.stackexchange.com/…/what-if-my-research-do…
—–
৭. পাস করেই জব এর চেষ্টা করবো নাকি বাইরে যাওয়ার?
– দেশের বাইরে যেতে চাইলে অনার্স শেষ করে দ্রুত যেতে পারলেই ভালো। কিন্তু উচ্চশিক্ষার জন্যে দেশের বাইরে যাওয়ার কথা যারা ভাবছো তারা এটা মাথায় রেখো যে দেশের বাইরে এপ্লাই করতেও অনেক টাকা খরচ হবে। যেমন আমেরিকার ক্ষেত্রে GRE +TOEFL দিতেই প্রায় 30K খরচ হবে, তারপর প্রত্যেক ভার্সিটির এপ্লিকেশন ফি + ডকুমেন্ট পাঠানো সব মিলিয়ে হাজারখানেক খরচ হবে। ৫-৬টা ভার্সিটিতে এপ্লাই করতে গেলে বেশ কিছু টাকা প্রয়োজন হবে। ফ্যামিলির জন্যে এই সাপোর্ট দেয়াটা কঠিন হতে পারে, সেক্ষেত্রে পাস করে কিছুদিন চাকরী করে এই টাকাটা নিজে ম্যানেজ করার চেষ্টা করা উচিত। সত্যি কথা বলতে গেলে অনার্স পাস করেই আমরা যারা শিক্ষকতায় বা অন্য পেশায় এসেছিলাম তাদের অনেকেই এভাবে নিজের এপ্লিকেশনের খরচ নিজে জোগাড় করেছি। অতএব সবকিছু মিলিয়েই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
আরো কিছু কথাঃ
১. প্রজেক্ট:
প্রজেক্ট মূলত কোন একটা সফ্টওয়ার সল্যুশন । সাধারণত প্রজেক্টে কোন একটি স্টুডেন্ট গ্রুপের কাছ থেকে মোটামোটি কমপ্লিট একটা সফ্টওয়ার প্রজেক্ট আশা করা হয়, যেখানে তারা তাদের কোন একটা প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজের দক্ষতা দেখাতে পারে । তবে তার চেয়েও বড় কথা, এখানে তাদের কাছ থেকে কোন একটা রিয়াল ওয়ারল্ড প্রবলেমের আইটি বেইজ সল্যুশন আশা করা হয় । অর্থাৎ প্রোগ্রামিংয়ের সাথে সাথে তাদের সফ্টওয়ার ইন্জিনিয়ারিং কনসেপ্ট ব্যবহারের সক্ষমতার দিকগুলোও দেখা হয় । সঠিক প্রবলেম আইডেনটিফিকেশন, সলূশন প্লান, ভায়াবিলিটি, কস্ট প্লান, রিকোয়ারমেন্ট অ্যানালাইসিস, ডিজাইন, টেস্টিং ইত্যাদির ব্যবহার একটা প্রজেক্টে থাকতে হয় ।যেমন একটা উদাহরণ দেই, আমরা যদি বাংলাদেশের ম্যারিজ সার্টিফিকেশন প্রসেসকে ডিজিটালাইজ করতে চাই তাহলে আমাদের কি কি করতে হবে, কেমন হবে এর সিস্টেম আর্কিটেকচার, ডিজাইন ও ইম্পিমেনটেশন । তবে বলে রাখি, স্টুডেন্ট প্রজেক্ট থেকে আমরা আশা করি না, যে এ্টা পুরোপুরি রিয়াল ওয়াল্ড ডিপ্লয়েবল সল্যুশন হবে । তবে তারা সফ্টওয়ার ইন্জিনিয়ারিং প্রসেস ফলো করেছে কিনা সেটাই মূলত দেখা হয় । প্রজেক্ট বিভিন্ন ধরনের হতে পারে, ওয়েব বেইজড, মোবাইল অ্যাপ, নেটওয়ার্কিং, সিস্টেম সল্যুশন ইত্যাদি । যেমন আরেকটি উদাহরন দেই, যদি আমরা চাই আমরা একটা মোবাইল পুশ-পুল বেইজ প্রজেক্ট করতে চাই যেখানে স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা সাবস্ক্রাইব করবে । এতে তারা প্রতিদিন সকালে একটা গণিতের বা বিজ্ঞানের প্রশ্ন পাবে । তারা ফিরতি এসএমএস-এ তার উত্তর পাঠাতে পারবে । উত্তর ভুল বা সঠিক যাই হোক পরের মেসেজে তাকে তা জানিয়ে দেয়া হবে ।
ভালো দিক:
প্রজেক্টে মূলত কোন ছাত্র/ছাত্রীর সফ্টওয়ার ইন্জিনিয়ারিং সক্ষমতা যাচাই করা হয় । এখানে ক্রিটিকাল থিংকিংয়ের তেমন সুযোগ নাই বা থাকলেও এটাই এখানে মূল বিবেচ্য বিষয় নয় বরং ইম্পিমেনটেশন দক্ষতাই প্রধান বিবেচ্য । এই ধরনের প্রজেক্ট ছাত্র/ছাত্রীদের সফ্টওয়ার ফার্মে কাজ করার প্রাথমিক জ্ঞানটুকু দিয়ে থাকে । তাই ভালো প্রজেক্ট করতে পারলে পরবর্তিতে তা সফ্টওয়ার ফার্মে ইন্টারভিউয়ের সময় পজিটিভ অ্যাট্রিবিউট হিসেবে বিবেচিত হয় ।
দুর্বলতা:
একটা প্রজেক্ট থেকে সাধারণত কোন পাবলিকেশন হয় না । তাই অ্যাকাডেমিক ওয়ারল্ডে প্রজেক্টের ভ্যালু কম । যারা উচ্চশিক্ষায় যেতে চায় তাদের জন্য এটা কোন বাড়তি ক্রেডিট যোগ করে না ।
———————————————————————
২. থিসিস:
থিসিসে সাধারনত ছাত্র/ছাত্রীরা যেকোন একটা অ্যাকাডেমিক প্রবলেমের প্রথমে থিওরিটিক্যাল সল্যুশন দেয় ও পরে ছোট একটা ইমপ্লিমেনটেশন বা সিমুলেশনের মাধ্যমে ভেলিডেশন করে দেখায় । তবে আন্ডারগ্রাজুয়েট ছাত্র/ছাত্রীদের কাছ থেকে সাধারনত কোন যুগান্তকারি সল্যুশন আশা করা হয় না, বরং দেখা হয় তার মধ্যে ক্রিটিক্যাল থিংকিং করার ক্ষমতা আছে কিনা এবং গবেষণা করার যে বিভিন্ন ধাপ বা প্রক্রিয়া আছে তা শিখতে পেরেছে কিনা । যেকোন গবেষনায় প্রথমেই কোন একটি নির্দিষ্ট ফিল্ডে প্রবলেম আইডেন্টিফিকেশন করতে হয় । তারপর এই রিলেডেড অনান্যদের কাজ দেখতে হয়, যদিও প্রবলেম আইডেন্টিফিকেশনের সময়ই অনেকের কাজ সম্পর্কেই ধারনা হয়ে যায় । তারপর সেই প্রবলেমের অন্য কোন থিউরির মাধ্যমে সল্যুশন আশা করা হয় । তারপর সেই সল্যুশনের একটা ভ্যালিডেশন তাকে করে দেখাতে হয় । ভ্যালিডেশন থিউরি বেইড (যেমন: ম্যাথমেটিক্যাল মডেল) বা সিমুলেশন বেইজড বা ছোটখাটো ইম্পিমেনটেশন বেইজড হতে পারে ।
যেমন একটা উদাহরণ দেই, ধরলাম আমরা ক্লাউড কম্পিউটিং নিয়ে কাজ করতে চাই । ক্লাউড কম্পিউটিংয়ে মূলত স্কেলিং, অনডিমান্ড রিকোয়ারমেন্ট, স্টোরেজ, সিকিউরিটিসহ বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে । প্রথমেই আমাদের কোন ধরনের সমস্যা সমাধান করতে চাই তা ঠিক করতে হবে । তারপর একটার একটা রিয়াল ওয়াল্ড সিনারিও দার কারাতে হবে এবং এই গবেষনার ফলে কি কি উন্নতি আমি আশা করছি তা বলতে হবে (এটাকে আমরা মূলত আমাদের রিসার্চের ভাষায় মটিভেশন বলে থাকি) । তারপর রিলেটেড কাজ ও বিভিন্ন কম্পিউটার সাইন্সের থিউরি ও ধারনার মাধ্যমে সেই সমস্যার সমাধান করতে হবে । থিসিসে যেহেতু কোন একটা নতুন প্রবলেম নিয়ে কাজ করা হয় তাই আমরা জানার চেষ্টা করি আমার সলুশ্যন নিয়ে এই ফিল্ডে যারা গন্যমান্য এক্সপার্ট আছেন তাদের মতামত কি । এটি জানার সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো কনফারেন্স । তাই আমরা আশা করি ছাত্র/ছাত্রীদের থিসিস কোন কনফারেন্সে যাতে পাবলিশ হয় । গবেষণা পাবলিশ হলে তা তার উচ্চশিক্ষাও কাজে লাগে ।
ভালো দিক:
থিসিসের সবচেয়ে ভালো দিক হলো, এটা ছাত্র/ছাত্রীদের ক্রিটিক্যাল থিংকিং করতে শেখায় যা কিনা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রের থেকে সবচেয়ে বেশি কাম্য । কারণ তাকে সামনের জীবনে সমাজের, দেশের অনেক আনসিন সমস্যার সমাধানের জন্য তৈরি করা হয় । এটাই মূলত একজন বিশ্ববিদ্যালয় গ্রাজুয়েট ও একজন কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত ছাত্রের মধ্যে পার্থক্য তৈরি করে । যাই হোক, থিসিসের আরো একটি ভালো দিক হলো, যদি গবেষণাটি ভালো কোন কনফারেন্সে পাবলিশ করে তবে তা তাকে ভালো স্কলারশিপের ক্ষেত্রে সাহায্য করবে ।
দুর্বলতা:
যেহেতু থিসিসের সময় কোন ছাত্র/ছাত্রী তার বেশিরভাগ সময় কোন একটি নতুন সমস্যা খোঁজা ও তার সমাধান খুজতে ব্যয় করে তাই তাদের কাছ থেকে প্রজেক্টের মতো কোন রানিং সলুশ্যন পাওয়া যায় না । ইনফ্যাক্ট আশাও করা হয় না বা এটা এর রিকোয়ারমেন্টও নয় । তাই থিসিস করা ছাত্র/ছাত্রীদের কোন একটি প্রোগ্রামিং ল্যাংগুযের খুটিনাটি সম্পর্কে ধারনা কম থাকে । যেহেতু সে নিজে কোন পুর্ণাঙ্গ সফ্টওয়ার প্রজেক্ট করে নাই, তাই অনেক সময় তাকে নিজে থেকে এইসব শিখে নিতে হয় । তবে যেহেতু তার ক্রিটিক্যাল থিংকিং করার ক্ষমতা আছে তাই খুব সহজেই সে এই ঘাটতি পুরন করে উঠতে পারে ।
—————————–
সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে, প্রজেক্ট হলো মুলত কোন একটি সফ্টওয়ার সলুশ্যন তৈরি যা সাধারণত সফ্টওয়ার ফার্মে কাজ করার সময় কাজে লাগে । আর থিসিস হলো গবেষণা শেখার ও তার ব্যবহার করে সমস্যা সমাধানের উপায় তাই এটি অ্যাকাডেমিক ক্ষেত্রে কাজে লাগে । তবে এটা এমনই হবে তারও কোন ধারা বাধা নিয়ম নাই । তবে যে যাই করুক লক্ষ্য, সিনসিয়ারিটি ও পরিশ্রম করার মানসিকতা নিয়ে কাজ করলে সাফল্য আসবেই ।
সবার জন্য শুভকামনা ।
অনেকেই ফোর্থ ইয়ারে থিসিস করছে এখন, প্রোজেক্টের বদলে।অনেকেই এক্ষেত্রে একটা সমস্যায় পড়ে Research Paper Download করতে গিয়ে, ডলার চায়, access দেয় না। তাদের জন্যে
১। প্রথমত আপনি যে আর্টিকেলটি ডাউনলোড করতে চান, সেটির ওয়েবসাইটে যাবেন, সেখানে প্রতিটি আর্টিকেলের জন্য একটি DOI নাম্বার থাকে সেটি কপি করুন। যেমন IEEE Explore এর “Tradeoffs between sensing quality and energy efficiency for context monitoring applications” এই পেপারটির Download access দেয়া হচ্ছে না।
পেপারটির DOI হচ্ছে 10.1109/NSysS.2016.7400699 এই নম্বরটি সাধারণত সব আর্টিকেলেই থাকে।
যদি না পান তবে আর্টিকেলটির URL(http://ieeexplore.ieee.org/document/7400699/) কপি করুন।
২। এরপর, আপনি আপনার ব্রাউজারে http://www.sci-hub.cc ওয়েবসাইটে যান, সেখানে গুগলের মতো একটি সার্চ ইঞ্জিন আছে। সেখানে DOI অথবা URL টি পেস্ট করে Open বাটনে ক্লিক করুন। সাথে সাথে ঐ পেপারের পিডিএফ কপি পেয়ে যাবেন। Down Arrow চিহ্নযুক্ত বাটনে ক্লিক করলেই ডাউনলোড হয়ে যাবে পেপারটা।
মাস্টার্সের শেষ পর্যায়ে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা যে বিষয় নিয়ে সবচেয়ে বেশি ভাবনায় পড়ে, তা হলো থিসিস পেপার তৈরি করা। এছাড়াও পিএইচডি করার সময়ও থিসিস করতে হয়, তবে পিএইচডির থিসিসের ক্ষেত্র মাস্টার্সের থিসিসের তুলনায় আরো অনেক বেশি বিস্তৃত।
থিসিস পেপার তৈরি করা নিঃসন্দেহে একটি চ্যলেঞ্জিং কাজ। থিসিসের মতো বড় স্কেলের প্রজেক্ট শেষ করতে প্রয়োজন পর্যাপ্ত সময়, ধৈর্য, প্রচুর পড়াশোনা এবং পরিশ্রম। তবে ভয় পাবার কোনো কারণ নেই। সঠিক সময় কাজ শুরু করলে, সব কিছু সুসংগঠিত করে রাখলে, রিসার্চের টপিক নিয়ে পড়াশোনা করলে ও প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট নোট করে রাখলে, আপনি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আপনার থিসিসের কাজ শেষ করতে পারবেন।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন